ভারতীয় আগ্রাসন ও আমাদের প্রস্তুতি

ভারতের আগ্রাসনের প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশের জনগণের মধ্যে গভীর উদ্বেগ এবং প্রতিরোধের চেতনা বেড়ে চলেছে। সীমান্তে নির্যাতন, অন্যায্য ট্রানজিট সুবিধা এবং গুমের মত ঘটনা এরই প্রমাণ। এ অবস্থায় তরুণ প্রজন্মের সচেতনতা এবং ঐক্যবদ্ধ প্রতিরোধ গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে।
চোখে চোখ রেখে কথা বলা
ভারতের সাথে সম্পর্কের ক্ষেত্রে যে নীতি অনুসরণ করা হয়েছে তা কখনোই ফলপ্রসূ হয়নি। ভারতের চাণক্য নীতির ধারক হওয়া সত্ত্বেও, প্রতিবেশী রাষ্ট্রের সাথে কঠোর ভাষায় কথা বলা এবং নিজেদের স্বার্থ রক্ষার জন্য প্রতিবাদ করা অপরিহার্য। সম্প্রতি বিক্রম মিশ্রির বাংলাদেশ সফরের মাধ্যমে এটি প্রমাণিত হয়েছে যে, ভারতের সমালোচনা ও প্রতিরোধে বিশ্বের অন্যান্য শক্তি একত্রিত হতে শুরু করেছে।
নিরাপত্তা চুক্তি ও বিপ্লবী বাহিনী গঠন
বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় আন্তর্জাতিক রাজনীতি এবং সহযোগিতার কৌশল গুরুত্বপূর্ণ। পাকিস্তানের সাথে সম্পর্ক বাড়ানো এবং একটি শক্তিশালী সামরিক সম্পর্ক গড়ে তোলা উচিত। এতে ভারতের আগ্রাসনের বিরুদ্ধে প্রতিরোধে আমাদের শক্তি বৃদ্ধি পাবে। এছাড়া বিপ্লবী বাহিনী গঠন ও তরুণ প্রজন্মের ভূমিকা বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ন, যেমনটি ইরান তার বিপ্লবের মাধ্যমে প্রমাণ করেছে।
বাণিজ্য নির্ভরতা কমানো
ভারতের উপর বাণিজ্য নির্ভরতা কমানো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বাংলাদেশকে পাকিস্তান, চীন এবং অন্যান্য দেশের সাথে বাণিজ্যিক সম্পর্ক বাড়াতে হবে। চীন থেকে শিল্পের কাঁচামাল আমদানি এবং পার্টনারশিপ গড়ে তোলা আমাদের স্বার্থে উপকারী হতে পারে। এটি ভারতের উপর নির্ভরতা কমানোর অন্যতম উপায় হতে পারে।
সুশীল সমাজের সাথে যোগাযোগ এবং আঞ্চলিক অখণ্ডতা
ভারতের জনগণের সাথে খোলামেলা আলোচনা এবং সম্পর্কের উন্নয়ন গুরুত্বপূর্ণ। ভারতের সরকারকে বোঝাতে হবে যে আমাদের কোন শত্রুতা নেই, বরং আমরা আমাদের ন্যায্য অধিকার চাই। বিশ্বের বিভিন্ন বুদ্ধিজীবী ও সুশীল সমাজের সহায়তায় একটি যৌথ প্রচেষ্টা চালানো প্রয়োজন।
অভিন্ন জাতীয় ইস্যু
ভারতীয় আগ্রাসন মোকাবেলা একটি অভিন্ন জাতীয় ইস্যু হতে হবে। সরকার ও জনগণের একযোগ প্রচেষ্টায় আমাদের জাতীয় স্বার্থ রক্ষা করতে হবে, এবং প্রতিটি সরকারের পক্ষে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে সমন্বিত এবং দৃঢ় অবস্থান গ্রহণ অত্যন্ত জরুরি।
বাংলাদেশের ভবিষ্যত স্থিতিশীলতা এবং নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে, আমাদের উচিত ভারতীয় আগ্রাসন মোকাবেলা করার জন্য একটি দৃঢ় নীতি গ্রহণ এবং একই সাথে আমাদের প্রতিবেশী দেশের সাথে ন্যায্য সম্পর্ক বজায় রাখা।
লেখক: আশফাকুর রহমান, সিনিয়র সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার