ত্যাগ, উৎসর্গের নামই কোরবানি

  মো. হাসিবুল হাসান
  প্রকাশিতঃ রাত ১২:৫২, রবিবার, ১৬ জুন, ২০২৪, ২ আষাঢ় ১৪৩১
মো. হাসিবুল হাসান
মো. হাসিবুল হাসান

কোরবানি শব্দের অর্থ ত্যাগ, উৎসর্গ, বিসর্জন, নৈকট্য লাভ ইত্যাদি। কোরবানি শব্দটি আরবি কুরবান শব্দ থেকে উদ্ধিত। পরিভাষায় একমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টি ও নৈকট্য লাভের উদ্দেশ্যে দিনে, নির্দিষ্ট সময়ে, নির্দিষ্ট ব্যাক্তির পক্ষ থেকে নির্দিষ্ট পশু জবেহ করাকে উযহিয়্যা বা কুরবানি বলে। 

 

সুরা আস সাফফাত ১০২ নং থেকে ১১০ নং আয়াত পর্যন্ত আল্লাহ তায়ালা বলেন, হে পুত্র  ইযরত ইসমাঈল  (আ:) যখন তার পিতা হযরত ইব্রাহীম (আ:) এর সাথে চলাফেরা করার বয়সে উপনীত হলো, তখন হযরত ইব্রাহীম (আ:) তাকে বলল, ‘হে আমার ছেলে! নিশ্চয় আমি হযরত ইব্রাহীম (আ:)  স্বপ্নে দেখেছি যে, তোমাকে আমি যবেহ করছি। সুতরাং তুমি ঈসমাইল (আ:) চিন্তা করে এ ব্যাপারে তোমার অভিমত কি তা বলো। হযরত ইব্রাহীম (আ:) বললেন, যা দেখানো হয়েছে আপনি তা করুন। ইনশাল্লাহ মহান আল্লাহর ইচ্ছায় আপনি আমাকে ধৈর্যশীদের অন্তর্ভুক্ত পাবেন। প্রাণের ভয়ে আমি পালাবো না।

 

মহান আল্লাহর ইচ্ছার সামনে তারা উভয়েই নিজেদের সামগ্রিক সত্তাকে সোপর্দ করে দিলো এবং হযরত ইব্রাহীম (আ:) তার সন্তানকে যবেহ করার উদ্দেশ্যে কাৎ করে শুইয়ে দিল। ঠিক যে মুহূর্তে তার সন্তান হযরত ঈসমাইল (আ:) তাকে যবেহ করতে উদ্যত হলো তখন আমি তাকে ডেকে বললাম,  হে  ইব্রাহীম! ক্ষান্ত হও ঘুমের মধ্যে যে স্বপ্ন তোমাকে দেখানো হয়েছিলো, নিশ্চয় তুমি তা সত্যে পরিণত করেছ। এভাবেই আমি আমার সৎ কর্মপরায়ণ একনিষ্ঠ বান্দাদের পুরস্কিত করে থাকি। অবশ্যই এ নির্দেশ পালন করা পিতা ও পুত্র দুজনের জন্যেই ছিলো স্পষ্ট কঠিন  এক পরীক্ষা। আর আমি  (আল্লাহ) ইব্রাহীমকে তার সন্তানের বিনিময়ে দান করলাম যবেহের বড় এক পশু। পরবর্তীকালে মানুষের মধ্যে পশু কোরবানির বিধান জারি রেখে আমি ইব্রাহীমকে স্বরণ করে  রেখেছি। ইব্রাহীমের প্রতি শান্তি বর্ষিত হোক। ‍(আস সাফফাত ১০২-১১০ আয়াত)

 

যা হযরত ইব্রাহীম (আ:) এর সময় থেকে আল্লাহর অনুগত বান্দাগণ কোরবানি করে থাকে। তাছাড়া ইসলামে কোরবানির ইতিহাস বেশ প্রাচীন।  আল কুরআনে হযরত আদম (আ:) এর সন্তান হাবিল এবং কাবিলের উল্লেখ পাওয়া যায়। হাবিল প্রথম মানুষ যে আল্লাহর জন্য একটি পশু কুরবানি করেন।  ইবনে কাসির বর্ণনা করেছেন যে, হাবিল একটি ভেড়া এবং তার ভাই কাবিল তার ফসলের কিছু অংশ স্রষ্টার উদ্দেশ্যে নিবেদন করে।

 

ইসলামি হিজরী বর্ষের জিলহজ্ব মাসের ১০ তারিখ সকাল থেকে ১২ তারিখ সূর্যাস্ত পর্যন্ত কোরবানি করার সময় হিসেবে নির্ধারিত।  এ  দিনে বিশ্বজুড়ে মুসলমানেরা কোরবানি দেয়। যার অর্থ  আল্লাহর নির্ধারিত দিনে তা খুশির জন্য নির্দিষ্ট দিনে একটি পশুকে যবেহ করা। অর্থাৎ আল্লাহর হযরত ইব্রাহীম (আ:) হাতে হযরত ঈসমাইল (আ:) কে যবেহ করার উদ্দেশ্যে ছিল না। বরং ‍দুনিয়ার কোনো জিনিসকে তুমি আমার মোকাবিলায় বেশি প্রিয় মনে করো কিনা, সেই পরীক্ষা নেয়াই ছিলো আসল উদ্দেশ্য। অর্থাৎ যুগে যুগে প্রত্যেক নবী ও রাসূলদের বিভিন্নভাবে পরীক্ষার সম্মুখীন হতে হয়েছে, এতে  ধৈর্য ্য ধারণ করা ও আল্লাহর ‍উপর ভরসা করাই মহান সফলতা।

 

সূরা হাজ্জের ৩৭ নং আয়াতে আল্লাহ তায়ালা  বলেন, আল্লাহর কাছে পৌঁছে না গোস্ত ও রক্ত, বরং তার কাছে পৌছে তোমাদের তাকওয়া। এভাবে তিনি সবকে তোমাদের অধীন করে দিয়েছেন, যাতে তোমরা আল্লাহর তাকবীর  পাঠ করতে পার। এজন্য যে তিনি তোমাদের হেদায়েত দান করেছেন; সুতরাং তুমি সৎ কর্মশীলদের সুসংবাদ দাও। ‍(সুরা হাজ্জ আয়াত নং ৩৭)

 

অর্থাৎ  এই কোরবানির মাধ্যমে আল্লাহ তায়ালার কাছে কোনো গোস্ত কিংবা রক্ত পৌঁছায় না বরং আল্লাহ দেখতে  চান তাকওয়া। যা আল্লাহকে অনুগত করার জন্য  কোরবানি করছে কিনা। কোরবানি হবে একমাত্র আল্লাহকে সন্তুষ্ট করার জন্যেই । সুরা আলা কাওসারে আল্লাহ তায়ালা বলেন, তুমি তোমার প্রতিপালকের উদ্দেশ্যে নামাজ আদায় করো এবং কোরবানি করো। ‍(সুরা আল কাওসার আয়াত নং ২)

 

এখন কথা হলো, কোরবানি কারা করবে? যারা জিলহজ্ব মাসের ১০, ১১ ও ১২ তারিখে নিজেদের নিত্য প্রয়োজনীয় খরচ ব্যতিত অতিরিক্ত সাড়ে বাহান্ন তোলা রুপা বা সাড়ে সাত তোলা স্বর্ণ বা এর সমমূল্যের মালিক হয়। তাহলে তাদের উপর কোরবানি করা আবশ্যক।

 

অর্থাৎ যারা এই তিনদিনে ৫৮,১৭০ টাকার মালিক থাকবে। আর ঋণগ্রস্ত ব্যক্তি যদি ঋণ পরিশোধ করার পর কোরবানির সময়ে তার নেসাব পরিমাণ সম্পদ না থাকে তবে এই ঋণগ্রস্ত ব্যক্তির জন্যে কোরবানি আবশ্যক নয়। আর যদি ঋণ পরিশোধ করার পরও কোরবানির সময়ে সাময়িক ঋণগ্রস্ত ব্যক্তির নেসাব পরিমাণ সম্পদ থাকে, তবে ওই ঋণগ্রস্ত ব্যক্তির জন্যে কোরবানি আবশ্যক।অর্থাৎ কোরবানির জন্য নেসাব পরিমাণ সম্পদ সারা বছর গচ্ছিত বা জমা থাকা আবশ্যক নয়। বরং কোরবানির ‍দিনগুলোতে যদি কারো কাছে ঋণ ও বাৎসরিক খরচ মেটানোর পর অতিরিক্ত অর্থ থাকে, আর তা সাড়ে সাত ভরি তোলা সোনা অথবা বাহান্ন তোলা ভরি ‍রুপার সম পরিমাণ অর্থ থাকে তবে তাকে কোরবানি দিতে হবে।

 

সামর্থ্য থাকার পরেও যারা কোরবানি করে না তাদের ব্যাপারে হাদীসে কঠিন কথা বলা হয়েছে। আবু হোরায়রা রা: বর্ণিত, রাসূল সা: বলেছেন, যে ব্যক্তি সামর্থ্য থাকার পরও কোরবানি করলো না সে যেন আমার ইদগাহের কাছেও যেন না আসে। (ইবনে মাজাহ) 

কোরবানির পশুতে শরিক হওয়া প্রসঙ্গে একটি হাদীস আছে, ইবনে আব্বাস রা: থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন আমরা রাসূল সা: সঙ্গে সফরে ছিলাম। তখন কোরবানি সময় উপস্থিত হলে আমরা একটি উটের দশজন আরেকটি গাভীতে সাতজন। যা কিন্তু উটের ক্ষেত্রে দশজন আর গাভীর ক্ষেত্রে সাতজনের বেশি নয়। কিন্তু একজন একটি কোরবানি দেওয়াই উত্তম।

ইবন মুসাইব (রা:) বর্ণিত, রাসূল (সা:) এর সহধর্মিণী উম্মে সালমা (রা:) তাকে অবহিত করেছেন রাসূল (সা:) বলেছেন, যে ব্যক্তি কোরবানি করার ইচ্ছা করে, সে যেন জিলহজ্বের প্রথম দশদিন তার নখ ও চুল না কাটে। (সুনানে ইবনে নাসায়)

 

সব জায়েজ পশু দিয়ে কোরবানি দেওয়া যায় না এবং কোরবানি  আদায় হয় না। কোরবানি করার জন্য শরিয়ত কর্তৃক নির্দিষ্ট পশু নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে। সে হিসেবে মোট ছয় প্রকার জন্তু দিয়ে কুরবানি করা জায়েজ। সেগুলো হলো উট, গরু, মহিষ, দুম্বা, ভেড়া ও ছাগল। এগুলো ছাড়া অন্য পশু দিয়ে কোরবানি জায়েজ নয়। কোরবানি করার জন্যে ছাগল, ভেড়া, দুম্বার বয়স কমপক্ষে এক বছর পূর্ণ হতে হবে। অবশ্য ছয় মাসের ভেড়া যদি দেখতে মোটা তাজা হয় এবং এক বছর বয়েসের মতো মনে হয়। তাহলে তা দিয়ে কোরবানি করা বৈধ। গরু, মহিষের হতে হবে পূর্ণ দুই বছর। আর উটের পাঁচ বছর পূর্ণ হতে হবে। (হিদায়া গ্রন্থ)

 

কিছূ ত্রুটি থাকলে কোরবানি দেওয় যাবে না। সেগুলো এখানে উল্লেখ করা হলো:

 

১. দৃষ্টি শক্তি না থাকা;

২. শ্রবণ শক্তি না থাকা:

৩. অত্যন্ত দুর্বল ও জির্ণশীর্ণ হওয়া;

৪. এই পরিমাণ লেংড়া যে যবেহ করার স্থান পর্যন্ত হেটে যেতে অক্ষম;

৫. লেজের বেশিরভাগ অংশ কাটা;

৬. জন্মগতভাবে কান না থাকা;

৭. কানের বেশিরভাগ কাটা;

৮. গোড়া সহ শিং উপরে যাওয়া;

৯. পাগল হওয়ার কারণে ঘাস, পানি ঠিক মতো না খাওয়া;

১০. বেশিরভাগ দাঁত না থাকা;

১১. রোগের কারণে স্তনের দুধ শুকিয়ে যাওয়া;

১২. ছাগলের দুটি দুধের যেকোনো একটি কাটা;

১৩. গরু বা মহিষের চারটি দুধের যেকোনো  দুইটি কাটা;

মোট কথা কোরবানির পশু বড় ধরণের দোষ ত্রুটি থেকে মুক্ত হবে। একটি হাদীসে ’বারা ইবন আযিব (রা: ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, ্আমি রসূল (সা:) কে বলতে শুনেছি, তখন তিনি তার আঙুল দ্বারা ইঙ্গিত করেছিলেন। আর আমার অঙ্গুলি রাসুল  (সা:) এর অঙ্গুলি অপেক্ষা ছোট। তিনি তার আঙ্গুল দ্বারা ইঙ্গিত করে বললেন, কোররবানিতে জায়েজ নয় কানা পশু, যার কানা হওয়া প্রকাশ্য; খোড়া পশু, যার খোঁড়া হওয়া প্রকাশ্য; রুগ্ন পশু, যার রোগ প্রকাশ্য; আর ‍ দুর্বল পশু যার হাড়ে মজ্জা নেই।(সহীহ সুনানে আন নাসায়ী)

 

কিছু পশুতে কিছু ত্রুটি থাকলেও কোরবানি দেওয়ার সুযোগ রয়েছে বা জায়েজ। সেগুলো হলো :

 

১. পশু পাগল, তবে ঘাস-পানি ঠিকমতো খায়;

২. লেজ বা কানের কিছু অংশ কাটা তবে বেশিরভাগ অংশ আছে;

৩ জন্মগতভাবে শিং নেই;

৪. কান আছে তবে ছোট;

৫. শিং আছে  তবে ভাঙা ;

৬. পশুর একটি পা ভাঙা তবে তিন পা দিয়ে সে চলতে পারে;

৭. পশুর গায়ে চর্মরোগ ;

৮ কিছু দাঁত নেই তবে বেশিরভাগ আছে। স্বভাবগত  একক অঙ্গ কোষের নয়;

৯. পশু বয়ো:বৃদ্ধ হওয়ার কারণে বাচ্চা জন্মদানে অক্ষম;

১০. পুরুষাঙ্গ কেটে যাওয়ার কারণে সঙ্গমে অক্ষম। তবে উত্তম হচ্ছে ত্রুটিমুক্ত পশু দিয়ে কুরবানি দেওয়া  এবং ত্রুটিযুক্ত পশু দ্বারা কোরবানি দেওয়া অনুচিত;

 

ইসলামের হিজরী বর্ষে জিলহজ্ব মাসের ১০ তারিখ সকাল থেকে ১২ তারিখ সূর্যাস্ত পর্যন্ত কোরবানি দেওয়ার সময় হিসেবে নির্ধারিত। অর্থাৎ কোরবানি করার তিনদিন সময়  নির্ধারণ করা হয়েছে। কিন্তু প্রথম দিন কোরবানি দেওয়া উত্তম। তবে ইদুল আযহার সালাতের পূর্বে কোনো কোরবানি দেওয়া যায় না। বরং করে থাকলে শুধু গোশত খাওয়া হবে। কোরবানি দেওয়া হবে না।

 

একটি হাদিসে আছে ‘বারা (রা:) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, কোরবানির দিন রাসূল (সা:) দাড়িয়ে বললেন; যে ব্যক্তি আমাদের  কিবলার দিকে মুখ করে আমাদের সালাতের ন্যায় সালাত আদায় করে এবং আমাদের হজ্বের আরকান সমূহ আদায় করে। সে যেন সালাত আদায় করার পূর্বে কোরবানি না করে। তখন আমার (‘বারার) মামা দাড়িয়ে বললেন, ইয়া রাসূল (সা:) আমি তো সালাতের পূর্বে কোরবানি করে ফেলেছি। আমার পরিবারের ও বাড়ির লোকদের অথবা তিনি বলেছেন আমার পরিবারের লোক ও প্রতিবেশিদেরকে খাওয়ানোর জন্যে। তখন রাসূল (সা:) বললেন, অন্য একটি পশু জবাই করো, তিনি বললেন, আমার নিকট বকরির বাচ্চা রয়েছে। যা আমার নিকট গোশতের ‍দুটি বকরি অপেক্ষা অধিক প্রিয়। তিনি বললেন, তুমি তা যবেহ করে। কেননা তোমার দুই কোরবানির মধ্যে সেটাই উত্তম।তোমার পর আর কারো পক্ষ থেকে অপ্রাপ্ত বয়স্ক বকরি গ্রহণযোগ্য হবে না। 

 

যবেহ প্রসঙ্গে শাহাদ্দাত ইবনে আউস (রা:) বর্ণিত, আমি রাসূল (সা:) থেকে দুটি কথা মুখস্ত রেখেছি। আল্লাহ তায়ালা প্রত্যেক বস্তুর উপরেই সদয় আচরণের নির্দেশ দিয়েছেন। সুতরাং যখন তোমরা পশু হত্যা করবে তখন উত্তম পন্থায় হত্যা করবে। যখন যবেহ করবে উত্তম পন্থায় যবেহ করবে। এবং তোমাদের প্রত্যেক ছুরিতে ধার দিয়ে নেবে। যবেহকৃত পশুকে ঠান্ডা হতে দিবে।  এবং ব্যক্তির যবেহ করার বিষয়ে একটি হাদীসে ‘জাবির ইবনে আব্দুল্লাহ (রা:) থেকে বর্ণিত রাসুল (সা:) তার কোনো কোনো কোরবানির পশু নিজ হাতে যবেহ করেছেন, আর কোন কোনটি অন্য লোক যবেহ করেছেন।

 

আর কোরবানির মাংস বিতরণ প্রসঙ্গে হাদীসে আছে ‘আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা:) থেকে বর্ণিত রাসূল (সা:) কোরবানির গোস্ত একভাগ নিজের পরিবারকে খাওয়াতেন, একভাগ গরিব প্রতিবেশিদের দিতেন, একভাগ গরিব মিশকিনকে দিতেন। এছাড়া ইবনে মাসউদ (রা:) কোরবানি গোস্ত তিনভাগ করে একভাগ নিজেরা খেতেন, একভাগ যে চাইতেন তাকে খাওয়াতেন, একভাগ ফকির-মিসকিনকে দিতেন।

 

কোরবানির গোস্ত খাওয়া ও রেখে দেওয়া প্রসঙ্গে একটি হাদীস আবু সাইদ খুদরী (রা:) থেকে বর্ণিত রাসূল সা: তিনদিনের অধিক সময় কোরবানির গোস্ত আহার করতে নিষেধ করেছেন। কাতাদা ইবনে নোমান (রা:) সফর শেষে বাড়ি আসলেন। আর তিনি ছিলেন আবু সাঈদ খুদরীর বৈপিত্রের ভাই এবং বদর সাহাবী। তার সামনে কোরবানির গোশত পেশ করা হলো। তিনি বললেন রাসূল কি তা থেকে নিষেধ করেন নি ? আর সাইদ (রা:) বললেন, এ বিষয়ে নতুন ব্যাপার ঘটেছে। রাসুল (সা:) তিনদিনের উপর তা আহার করতে নিষেধ করেছিলেন। তারপর আমাদের তা খাওয়া ও জমা করে রাখার অনুমতি প্রদান করেছেন। (সুনানে নাসাঈ)

শিক্ষা: কোরবানি দেওয়ার মাধ্যমে তাকওয়া অর্জিত হয়, কোরবানি আমাদের ত্যাগ ও উৎসর্গ করতে শিক্ষা দেয়। আমাদের উপর ইসলামের যে বিধানই হোক আমাদের তা পালন করতে হবে। আল্লাহর রাজী খুশির জন্য যথাসাধ্য চেষ্টা করতে হবে। এই কোরবানির মাধ্যমে মানুষ মানুষের মাঝে সামাজিক সম্পর্ক সৃষ্টি হয় এবং মানুষের পাশে থাকতে শেখায়।

শিক্ষার্থী, ঢাকা কলেজ।

Share This Article