ক্যান্সারের ওষুধের দাম কমিয়ে ভিটামিনের দাম বাড়াতে প্রস্তাব

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ক্যান্সার ওষুধের দাম কমিয়ে মাল্টিভিটামিন ও মাল্টিমিনারেল জাতীয় ওষুধের দাম বাড়ানোর প্রস্তাব দিয়েছে। ১৫ জানুয়ারি জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যানকে পাঠানো চিঠিতে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ উপদেষ্টা নূরজাহার বেগম উল্লেখ করেছেন যে, ক্যান্সার ওষুধের কাঁচামাল ও ওষুধের ওপর আরোপিত অ্যাডভান্স ইনকাম ট্যাক্স (এআইটি) এবং অ্যাডভান্স ট্যাক্স (এটি) কমিয়ে মাল্টিভিটামিন ও মাল্টিমিনারেল জাতীয় ওষুধে এআইটি ও এটি আরোপ করা হলে সরকার ৩৪০ থেকে ৩৫০ কোটি টাকা রাজস্ব বাড়াতে পারবে।
তবে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, সব ওষুধই প্রয়োজনীয়, তাই একটির দাম কমিয়ে আরেকটির দাম বাড়ানোর প্রস্তাব যুক্তিসংগত নয়। এ প্রসঙ্গে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাস্থ্য অর্থনীতি ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক ড. সৈয়দ আবদুল হামিদ বলেন, ওষুধের ওপর কোনো ধরনের ভ্যাট বা ট্যাক্স না থাকাই ভালো। যদি করতেই হয় তাহলে অবশ্যই সেটা হবে সর্বনিম্ন পর্যায়ের। চিঠিতে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় রাজস্ব বাড়ানোর একটি পথ বাতলে দিয়েছে। কিন্তু মনে রাখতে হবে, কোনো রোগী নিজে থেকে মাল্টিভিটামিন বা মাল্টিমিনারেল কিনে খান না; চিকিৎসকের পরামর্শে তাদের কিনতে ও সেবন করতে হয়। তা ছাড়া এ ধরনের ওষুধ অপেক্ষাকৃত দুর্বল, পুষ্টিহীন রোগীদের জন্য পরামর্শ করা হয়। ক্যান্সার ওষুধের ওপর কর প্রত্যাহারের মাধ্যমে দাম কমানোর উদ্যোগ অবশ্যই ইতিবাচক। তবে মাল্টিভিটামিন ও মাল্টিমিনারেলের ওপর করারোপ যুক্তিসংগত নয়। কারণ এই করের বোঝা গরিব রোগীদের ওপরই বর্তাবে।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের চিঠিতে আরও বলা হয়েছে, ক্যান্সার চিকিৎসায় প্রয়োজনীয় অ্যান্টি-ক্যান্সার জাতীয় ওষুধের কাঁচামালের ওপর কর কমানোর উদ্যোগ নেওয়া হলে দেশের দরিদ্র মানুষদের জন্য চিকিৎসা সাশ্রয়ী হবে। তবে মাল্টিভিটামিন ও মাল্টিমিনারেল জাতীয় ওষুধের ওপর কর বাড়ানো যুক্তিসংগত নয়, কারণ এসব ওষুধ সাধারণত দুর্বল বা পুষ্টিহীন রোগীদের জন্য প্রয়োজন হয়।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, চিঠিটি পর্যালোচনা করা হচ্ছে এবং পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।