হার্টের রিং সরবরাহ বন্ধের প্রভাব রাজধানীর হাসপাতালে
রাজধানীর হাসপাতালগুলোতে কম দামের হার্টের রিং সরবরাহ বন্ধের প্রভাব পড়েছে। মাত্র ৩টি প্রতিষ্ঠানের আমদানি করা রিং দিয়ে চলছে অস্ত্রোপচার। সামর্থ্য না থাকায় অনেক রোগী ফিরে যাচ্ছেন। রিং সরবরাহ স্বাভাবিক না হলে মারাত্মক পরিস্থিতির আশঙ্কা করছেন চিকিৎসকেরা। অচলাবস্থা নিরসনে দ্রুত আলোচনার তাগিদ চিকিৎসকদের।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) রোগীর চিকিৎসা নিয়ে কথা বলছিলেন স্বজনেরা। নাম না প্রকাশের শর্তে স্বজনেরা জানান, হার্টে ব্লক শনাক্ত হওয়ায় রোগীকে রিং পরানোর প্রয়োজন হয়। জীবন বাঁচাতে বাধ্য হয়েই বেশি দামের রিং কিনতে হচ্ছে তাঁদের।
চিকিৎসকেরা জানান, শুধু যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানি করা বেশি দামের রিং দিতে পারছেন তাঁরা। এমন বাস্তবতায় দিনে অস্ত্রোপচার হচ্ছে ১০ থেকে ১৫টি। আর্থিক সংকটে অনেকেই নিতে পারছেন না চিকিৎসা। একই অবস্থা দেশের অন্যতম বড় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালেও।
বিএসএমএমইউ’র কার্ডিওলজী বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. এস এম ইয়ার ই মাহবুব বলেন, যে রোগীর সামর্থ্য কম এবং কম দামে খুঁজছে তাদের দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। এতে রোগীরা ফিরে যাচ্ছে।
ইয়ার ই মাহবুব বলেন, ‘কম দামের রিং আমরা তাদের সরবরাহ করতে পারছি না। এটা তাদের জন্য পীড়াদায়ক। এই সমস্যা থেকে আমাদের পরিত্রাণ পাওয়া দরকার।’
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল নাজমুল হক বলেন, হাজার হাজার লোকের রিং পরানো হয়। এক্ষেত্রে একটা দেশের ওপর যখন নির্ভরশীল হয়, তখন দামের পরিবর্তন হতে পারে। সরবরাহের সংকটও হতে পারে। এক্ষেত্রে ওই বিষয়গুলোই সামনে আসছে। শুধুমাত্র ৩টি কোম্পানির রিং দিয়েই অপারেশন চলছে। তবে দ্রুত সরবরাহ স্বাভাবিক না হলে বড় ধরনের প্রভাব পড়বে।
বিএসএমএমইউ কর্তৃপক্ষ বলছে, ভারতে ৪০ হাজার রুপির রিংয়ের দাম দেশে প্রায় দেড় লাখ টাকা কীভাবে হয়, সেটি খতিয়ে দেখা উচিত সরকারের। এছাড়া সংকট সমাধানে সব পক্ষের আলোচনা জরুরি।
বিএসএমএমইউ’র উপাচার্য অধ্যাপক ডা. শারফুদ্দিন আহমেদ বলেন, যে কোম্পানিরই হোক নির্দিষ্ট দামের করা উচিত। আর সংকট সমাধানে সব পক্ষের বসা উচিত। কোনো ধরনের অচলাবস্থা যেন তৈরি না হয়।
নৈরাজ্য রোধে গেল ১৬ ডিসেম্বর সব ধরনের রিংয়ের দাম পুনর্নির্ধারণ করে ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর। তবে এ নিয়ম না মেনে পরদিন থেকে সরবরাহ বন্ধের ঘোষণা দেয় ইউরোপ থেকে আমদানি করা ২৪টি প্রতিষ্ঠান।