পুলিশ যেন মানবিক ও জনবান্ধব বাহিনী হিসেবে ফিরে আসে সে বিষয়ে কাজ চলছে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেছেন, বাংলাদেশ পুলিশ যেন পুরনো রুপে মানবিক পুলিশ হিসেবে উজ্জীবিত হয়ে ফিরে আসে এবং পুরানো গৌরব ফিরিয়ে জনবান্ধব পুলিশ যেনো হয় সে বিষয় আমরা সবাই কাজ করছি।জনগণের একটা আশা, তারা যেন জনবান্ধব পুলিশ বাহিনী পায়।
বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ডিএমপি সদরদপ্তরে পুলিশের উর্ধতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন তিনি।
তিনি বলেন, জনবান্ধব পুলিশ যেন বাস্তবে হয়। এটা যেন কোন কাগজ-কলমে না থাকে তা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। থানা পর্যায়ে লোকজনকে অনেক সময় বিভিন্ন কাজের জন্য গিয়ে তাদের যে সমস্যা সেটার সমাধান করতে পারেন না, সবসময় সমাধান সম্ভবও নয়। কিন্তু তারপরেও তাদের যেন প্রাথমিক সেবা দেওয়া হয়।
ঢাকা মহানগর পুলিশকে উজ্জীবীত করার পাশাপাশি রাজধানীর ট্রাফিক ও চাঁদাবাজি সমস্যা সমাধানে ডিএমপিকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ট্রাফিকে যে একটা সমস্যা হচ্ছে, এই ট্রাফিকটা কীভাবে উন্নত করা যায় সেটা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। চাঁদাবাজি কীভাবে বন্ধ করা যায় এই সম্বন্ধে কথা হয়েছে। চাঁদাবাজিটা যদি বন্ধ হয় জিনিসপত্রের দামটা একটু সহনীয় পর্যায়ে চলে আসবে।
রাজধানীর বিভিন্ন থানায় হয়রানিমূলক মামলা হচ্ছে। বাদী আসামিদের চেনে না। পুরাতন ফরম্যাটে হয়রানির বিষয় জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, পুলিশ কিন্তু আগে মামলা দিতো, এই সময়ে কোন পুলিশ একটা মামলা দিয়েছে? আগে পুলিশ ১০ জনের নাম দিয়া ১০০ জনকে অজ্ঞাত রেখে দিতো। কিন্তু আজ পর্যন্ত পুলিশ কিন্তু মামলা দিচ্ছে না, এটা কিন্তু সাধারণ পাবলিকরা দিচ্ছে। যদি পুলিশ একটা এমন মামলা দেয় আপনি আমার কাছে আইনেন, যে ১০ জনরে নাম দিয়ে, ৫০০ জনকে অজ্ঞাত করে দেওয়া। এখন যারা মামলা দিচ্ছে সাধারণ জনগণ। তাদের বলতে হবে ভাই, যারা অ্যাকচ্যুয়াল ক্রিমিনাল তারে দেও। কালকে আমার কাছে একজন আসছিল, বলে স্যার আমাদের যে অরিজিনিয়াল আসামি তাকে ১১ নম্বরে রাখা হয়েছে। আমি বলি কেন? তারেতো এক নাম্বারে রাখার কথা। আপনাদের কাছে আমার অনুরোধ, শুধু যারা দোষী তাদেরই নাম দেন। অন্য কাউরে নাম দিয়েন না। অন্য নাম দিলে এইটা তদন্ত করতে সময়ও বেশি যাচ্ছে এবং অনেক সময় নিরীহ লোকও যেন হেনস্তা না হয় এইদিকে খেয়াল রাখতে। এইজন্য আমরা কিন্তু বলে দিয়েছি যে, সাধারণ লোক যেন হেনস্থা না হয়। তদন্ত ছাড়া কাউকেই এরেস্ট করা হবেনা। এবং আমি ডিবিরে আজকে ইনস্ট্রাকশন দিয়ে দিছি, তাদের পরিচয় আগে দিতে হবে। এরপর গ্রেফতার করতে হবে। এইখানে আমার ধরার কথা শুধু ক্রিমিনালদের। আমি সাধারণ মানুষকেতো ধরার জন্য বলবোনা, ক্রিমিনালদের ধরার জন্য। সাধারণ পাবলিকের যেটা কমফোর্ট হয়, এটার দিকে পুলিশ চেষ্টা করবে।
রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে বিচারবহির্ভূত হত্যার ঘটনা ঘটছে। এটা বন্ধের বিষয় জানতে চাইলে তিনি বলেন, মব জাস্টিসের ক্ষেত্রে জনসচেতনতাটা একটু বাড়াতে হবে। কালকে দেখলাম জাহাঙ্গীরনগরে, তারাতো সবচেয়ে শিক্ষিত। তাদের ক্ষেত্রেতো এই সচেতনতাটা আসতে হবে। একজন অন্যায় করলে তাকে আইনের হাতে সোপর্দ করেন। কিন্তু আইনতো আপনার হাতে তুলে নেওয়ার কারও কিন্তু অধিকার নাই। আইনের হাতে তাকে সোপর্দ করতে হবে। এইটার ক্ষেত্রে আপনারাও একটু আমাদের সাথে কাজ করতে পারেন। জনসচেতনতা বৃদ্ধি করতে হবে। ইনোসেন্ট লোক যেন কোন অবস্থায়ই কোন হেনস্থা না হয়।