খেলাপিদের ধরতে দেখা হবে না রাজনৈতিক পরিচয়
ব্যাংক খাতকে রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত করে বড় সংস্কারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এক্ষেত্রে খেলাপিদের ধরতে সব ধরণের পদক্ষেপ নিতে ব্যাংকের কার্যনির্বাহীদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বুধবার ব্যাংকার্স সভায় বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আবদুর রউফ তালুকদার ব্যাংকের প্রধান নির্বাহীদের এসব নির্দেশ দিয়েছেন। সভা শেষে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশের চেয়ারম্যান ও ব্র্যাক ব্যাংকের এমডি সেলিম আরএফ হোসেন।
সেলিম আর এফ হোসেন বলেন, আমাদেরকে বাংলাদেশ ব্যাংক যেই ফ্রেমওয়ার্ক দিয়েছে সে অনুযায়ী ব্যাংকিং পরিচালনা হবে। খেলাপিদের ধরতে কোন রাজনৈতিক পরিচয় বিবেচনা করা হবে না। এছাড়া ব্যাংকে সুশাসন ফেরাতে যা যা পদক্ষেপ নেওয়া দরকার সব কিছুই নিতে গভর্নর নির্দেশ দিয়েছেন।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংক যেসব পদক্ষেপ নিয়েছে সেগুলো ইতোমধ্যেই কাজ করতে শুরু করেছে। ইতোমধ্যে আমাদের মূল্যস্ফীতি কিছুটা কমেছে। ডলার সংকট অনেকটাই কেটে এসেছে। তবে এখনো ডলারের কিছুটা সংকট রয়েছে। যা দ্রুত সময়ের মধ্যে কেটে যাবে। আর ডলার সংকটের কারণে রমজানের পণ্য আমদানিতে কোন ধরণের সমস্যা তৈরি হবে না।
আর বাংলাদেশ ব্যাংক নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মেজবাউল হক বলেন, পলিসি রেটা বাড়ানোর কারণে আগামী কয়েকমাস একটু টাইট সিচুয়েশন থাকবে। তাই ব্যাংকগেলোকে সে অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। ঋণের সুদহার বাড়লে বাজারে তারল্য কমাটাই স্বাভাবিক। তাই প্রয়োজন হলে ব্যাংকগুলো রেপোর মাধ্যমে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে ধার করতে পারবে। এটা বাংলাদেশ ব্যাংকের নিয়মিত কাজ। ব্যাংকগুলো তারল্য সংকটে পড়লেই কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে ধার নেয় এমন না। অনেক ব্যাংক তারল্য সংকট না থাকলেও তাৎক্ষণিক প্রয়োজন মেটাতে ধার নেয়। সুতরাং চাইলেই ব্যাংকগুলো কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কাথে সহযোগীতা নিতে।
মুখপাত্র বলেন, আমরা ব্যাংকের সুশাসন ফেরাতে একটি কমিটি গঠন করেছি। তারা একটি একশন প্ল্যান করছে। সেখানে খেলাপি ঋণ কমানো এবং সুশাসনের নিশ্চিত করতে একটি সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা নিয়ে আসবো। আমরা মুদ্রানীতি ঘোষণা করার সময় ক্রলিং পেগ চালুর বিষয়ে ঘোষণা দিয়েছিলাম। দ্রুত সময়ের মধ্যে সেটি বাস্তবায়ন করা হবে। ব্যাংকের প্রধান নির্বাহীদের ক্রলিং পেগ বাস্তবায়নে পদক্ষেপ নিতে বলা হয়েছে।
ব্যাংকার্স মিটিংয়ের বিষয়ে মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী সৈয়দ মাহবুবুর রহমানের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, সেখানে পিসিএ, ক্রলিং পেগ, মার্জারসহ নানা বিষয়ে আলোচনা করা হয়েছে। অর্থাৎ দুর্বল ব্যাংকগুলো যাতে ভালো ব্যাংকের সাথে মার্জ করে ভালো কিছু হয় সেটাই চিন্তা করছে বাংলাদেশ ব্যাংক। গভর্নর সাহেব বলেছেন পলিটিক্যালি যাই হোক না কেন তিনি ব্যাংকে সুশাসন ফেরাতে কোন আপোশ করবে না। তিনি বলেছেন, কোন ব্যাংককে কিভাবে মার্জ করতে চান সে বিষয়ে আপনারাই দেখেন। অর্থাৎ আগামীতে ব্যাংকিং সেক্টর ঘুরে দাঁড়াবে।