যেভাবে সালমানকে ধরিয়ে দেন আনিসুল হক

  নিজস্ব প্রতিবেদক
  প্রকাশিতঃ সন্ধ্যা ০৭:২১, শনিবার, ৩১ আগস্ট, ২০২৪, ১৬ ভাদ্র ১৪৩১

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মুখে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার প্রধানমন্ত্রী পদ থেকে পদত্যাগ করে দেশ ছাড়ার পর গ্রেপ্তার হচ্ছেন আওয়ামী লীগের মন্ত্রী-এমপিসহ নেতাকর্মীরা।

পরিস্থিতি টের পেয়ে দলের অনেকে আগেই দেশ ছাড়তে পারলেও ৫ আগস্টের পর ভয়াবহ বেকায়দায় পড়ে গেছেন একাধিক এমপি-মন্ত্রীসহ অসংখ্য নেতাকর্মী।

তাদের মধ্যে দুজন হলেন সাবেক প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারিবিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান এবং সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক।

গত ১৩ আগস্ট ঢাকা মহানগর পুলিশ রাজধানীর সদরঘাট এলাকা থেকে পলায়নরত অবস্থায় তাদের দুজকে গ্রেপ্তার করেছে।

সালমান এফ রহমান নিজেই এমনটি দাবি করেছেন যে ধরা পড়ার পূর্বে কোস্টগার্ড সদস্যরা শুরুতে তাকে চিনতে পারেননি। শেভ করার পর তিনি নিজেই নিজেকে চিনতে পারছিলেন না বলেও জানান তিনি।

অপরদিকে কোস্টগার্ডের সদস্যরাও জিজ্ঞাসাবাদের শুরুতে আনিসুল হককে চিনতে পারলেও সালমান এফ রহমানকে চিনতে পারছিলেন না। জিজ্ঞাসাবাদের একপর্যায়ে আনিসুল হক কোস্টগার্ডের সদস্যদেরকে চিনিয়ে দেন শেভ করা ব্যক্তিই সালমান এফ রহমান ।

শনিবার (৩১ আগস্ট) হত্যা মামলায় ১০ দিনের রিমান্ডে থাকা সালমান এফ রহমান এবং আনিসুল হকের কাছ থেকে এ তথ্য বেরিয়ে আসে।

জানা যায়, গত ৫ আগস্টের পর রাজধানীসহ চারপাশের ভয়ংকর অবস্থা বুঝতে পারেন সালমান এফ রহমান। বিমানবন্দরসহ গুরুত্বপর্ণ জায়গাগুলো থেকে ইতিবাচক সাড়া না পেয়ে উত্তরার নিজের মালিকানাধীন একটি জুট মিলে যান।

সেখানে গিয়ে ছদ্মবেশ ধারণ করতে নিজের মুখভর্তি সাদা দাড়ি নিজেই কেটে ফেলেন তিনি।

এসময় বেক্সিমকো গ্রুপে কর্মরত নৌবাহিনীর একজন অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা দেশ ছাড়ার উপায় বলে দেন তাকে। সেই কর্মকর্তাই মোটা অঙ্কের টাকায় তাকে ম্যানেজ করে দেন একটি ইঞ্জিনচালিত ট্রলার।

পরবর্তী সময়ে রাজধানীর ৩০০ ফুট সড়কের কাঞ্চন ব্রিজ এলাকা থেকে ওই ইঞ্জিনচালিত ট্রলারে চড়েন সালমান এফ রহমান।

অপরদিকে সঙ্গী হিসেবে ডেকে নেন বিপদে পড়া ঘনিষ্ঠজন সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হককে। সাথে প্রয়োজনীয় সামগ্রী হিসেবে সঙ্গে নেন স্যাটেলাইট ফোন, বিভিন্ন দেশের মুদ্রা। ভোলার উদ্দেশে নৌযানটি যাত্রা শুরু করে। যাওয়ার সময় মাঝ পথ থেকে সঙ্গে নেওয়া হয় যাবতীয় খাদ্য ও জরুরিসামগ্রী।

তারা নৌপথে পাড়ি দিতে চেয়েছিলেন মিয়ানমার-ভারত, সুবিধা করতে না পেরে বঙ্গোপসাগরে সাতদিন ভেসে ছিলেন। সুযোগ খুঁজতে থাকেন মিয়ানমার পাড়ি দেওয়ার।

মাঝখানে ভারতে পাড়ি দিতে সুন্দরবনের ভারত সীমান্তবর্তী এলাকার কাছাকাছি পর্যন্ত গিয়েছিলেন। তবে পরিস্থিতি সুবিধাজনক মনে না হওয়ায় নৌকার সারেং ফের ফিরে আসেন ভোলা এলাকায়। নতুন করে পরিকল্পনার সিদ্ধান্ত নেন মিয়ানমার পাড়ি দেবেন তারা।

এরই মধ্যে তথ্যের ভিত্তিতে ঢাকা মহানগর পুলিশ নৌপথে ১৩ আগস্ট রাজধানীর সদরঘাট এলাকা থেকে পলায়নরত অবস্থায় তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।

Share This Article