সেনাবাহিনীকে বিচারিক ক্ষমতা দেওয়ার মানে প্রশাসন ব্যর্থ: ফখরুল

  নিজস্ব প্রতিবেদক
  প্রকাশিতঃ বিকাল ০৫:১২, বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৪, ৪ আশ্বিন ১৪৩১

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, সেনাবাহিনীকে ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। এটা ভালো কথা। তার মানে হলো, আইনশৃঙ্খলা বজায় রাখতে প্রশাসন ব্যর্থ হয়েছে। সেনাবাহিনীকে ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা দেওয়ার মানে অন্যরা কাজ করছে না।

বৃহস্পতিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) বেলা ১১টার দিকে ঠাকুরগাঁও প্রেসক্লাবে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে হতাহতদের সঙ্গে মতবিনিময় ও আর্থিক সহায়তা অনুষ্ঠানে মির্জা ফখরুল এসব কথা বলেন।

বিএনপির মহাসচিব বলেন, আমি মনে করি, যেসব এলাকা নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেছে, সেসব এলাকাতেই সেনাবাহিনীকে ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা দেওয়া দরকার। কিন্তু যেসব এলাকা শান্তিপূর্ণ আছে, যেখানে রাজনৈতিক নেতা-কর্মীরাই বিষয়গুলোকে নিয়ন্ত্রণ করছেন; সেখানে সেনাবাহিনীকে ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা দিয়ে নতুন সমস্যা তৈরি করা সমীচীন হবে না, বুদ্ধিমানের কাজ হবে না।

মির্জা ফখরুল বলেন, আমি অন্তর্বর্তী সরকারকে অনুরোধ করব, তারা বিষয়টি পুনর্বিবেচনা করবে। কখনই এমন কোনো ব্যবস্থা নেবেন না যা সামগ্রিকভাবে তাদের জন্য বুমেরাং হবে, দেশের মানুষের জন্য বুমেরাং হবে।

তিনি বলেন, আমরা আশাবাদী অন্তর্বর্তী সরকার সব জঞ্জাল দূর করে দেশে এমন একটা পরিবেশ সৃষ্টি করবে, যেখানে সুষ্ঠু উপায়ে একটা গ্রহণযোগ্য নির্বাচন হবে। সেই নির্বাচনে জনগণের পার্লামেন্ট তৈরি হবে।

তিনি আরও বলেন, এই অন্তর্বর্তী সরকারকে আহ্বান জানাতে চাই, আমরা যেন সত্যিকার অর্থে একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র দেখতে পাই। গণতান্ত্রিক মানে নির্বাচিত সরকার দেখতে পাই, পার্লামেন্ট দেখতে পাই। আমি জানি আমার কথাগুলো অনেকের মনঃপূত নাও হতে পারে। কিন্তু সত্য উচ্চারণ করা আমার দায়িত্ব। সেই দায়িত্ব থেকেই আমি এই কথাগুলো উচ্চারণ করছি।

রাজনীতিবিদদের রাজনৈতিক কাজ করতে দেওয়া, এটাই সমস্যার একমাত্র সমাধান বলে তিনি মত দেন।

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, হাসিনা সরকারের পতনের পর দেশে সবার সমর্থনে একটা অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করা হয়েছে। তাঁরা চেষ্টা করছেন অল্প সময়ের মধ্যে শেখ হাসিনা সরকারের অপরাধগুলোর বিচার করতে।

এই অপরাধের  মূল হোতা শেখ হাসিনা জানিয়ে তিনি বলেন, তাঁর নির্দেশেই হাজার হাজার মানুষের প্রাণ গেছে। ছাত্র-জনতার আন্দোলনের কয়েক দিনে তো গেছেই, তারও আগে ২০১২ সাল থেকে শুরু হয়েছিল এই অত্যাচার। বিএনপির সাত শর বেশি মানুষকে গুম করে আয়নাঘরে নিয়ে গেছে। হাজার হাজার নেতা-কর্মীকে হত্যা করা হয়েছে। সাধারণ মানুষ, কৃষক, যাঁরা কোনো দিন আদালতের প্রাঙ্গণ পর্যন্ত দেখেননি; তাঁদের নিয়মিত আদালতে যেতে হয়েছে। গত ১০-১২ বছরে আদালতে যেতে যেতে তাঁরা নিঃস্ব হয়ে গেছেন।

অনুষ্ঠানে জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মির্জা ফয়সাল আমীন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পয়গাম আলী, পৌর বিএনপির সভাপতি শরিফুল ইসলামসহ জেলা বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

Share This Article