ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধের দাবিতে ঢাবিতে মশাল মিছিল
*রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিনের পদত্যাগ দাবি
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের হামলার প্রতিবাদে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে মশাল মিছিল করেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। এসময় তারা ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধের দাবি জানিয়েছে। একইসাথে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের পদত্যাগও দাবি করেন।
গতকাল সন্ধ্যায় এই মিছিল থেকে তারা এসব দাবি করেন। সাড়ে ৭টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সন্ত্রাসবিরোধী রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশ থেকে মশাল মিছিল শুরু হয়ে ক্যাম্পাসের গুরুত্বপূর্ণ স্থান প্রদক্ষিণ করে আবার রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে এক সংক্ষিপ্ত সমাবেশে মিলিত হয়।
এসময় আন্দোলনকারীরা “একটা একটা লীগ ধর, ধরে ধরে জেলে ভর”; “আমার ভাই কবর, খুনি কেন ভারতে”; “ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ, করতে করতে হবে”; “এক দুই তিন চার, ছাত্রলীগ ক্যাম্পাস ছাড়”; “স্বৈরাচারের দোসরেরা, হুঁশিয়ার সাবধান” “মুজিববাদ নিপাত যাক, ইনকিলাব জিন্দাবাদ”; “ছাত্রলীগের ঠিকানা, এই ক্যাম্পাসে হবে না” ইত্যাদি স্লোগান দিতে থাকেন।
সমাবেশে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সন্বয়ক হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, আমি আসিফ স্যারসহ স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাদের কাছে প্রশ্ন রাখতে চাই। আজকে আড়াই মাস পরে যদি ছাত্রদের রাজপথে এসে আন্দোলন করতে হয় যে ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ করতে হবে। তাহলে আপনাদের কাজটা কি? আসিফ স্যার, আপনি আতিদ্রুত যদি প্রত্যেকটা ছাত্রলীগ নেতাকে গ্রেফতার করতে না পারেন তাহলে শহিদ ও আহতদের রাক্তের সাথে প্রতারণা করছেন।
হাসনাত আরও বলেন, ছাত্রলীগ বর্তমান বাংলাদেশে প্রাসঙ্গিক কিনা সেটা চব্বিশের ১৫ই জুলাই প্রমাণিত হয়ে গেছে। ছাত্রলীগে এবং আওয়ামীলীগের ভবিষৎ কবরস্থ হয়ে গেছে ৫ই আগস্ট। তারা সীমান্তের ওপারে বসে ষড়যন্ত্র করেছে। আমরা বলে দিতে চাই, ছাত্রলীগ, আওয়ামীলীগ এবং ফ্যাসিবাদের পুনর্বাসন বাংলাদেশে আর হবে না।
রাষ্ট্রপতিকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলে, চুপ্পু সাহেবকে বলতে চাই, এখনও সময় আছে বঙ্গভবনের বিলসীতা ছেড়ে, আপনি আপনার রাস্তা দেখে নিন। আমরা ফ্যাসিস্ট হাসিনার যে সংবিধান সেটাকে আমরা মানি না যদিও আপনি সেটারও শপথ ভঙ্গ করেছেন। আপনি যদি ফ্যাসিস্ট খুনী হাসিনাকে পুনর্বাসন করেতে চান সেটি হবে না।
সমন্বয়ক আবু বাকের মজুমদার বলেন, আমরা ২৪-এর গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে ফ্যাসিবাদের কবর দিলেও এখনো তাদের মূলোৎপাটন করতে পারিনি। এই বাংলার মাটিতে এখনো ফ্যাসিবাদ মাথাচাড়া দিচ্ছে। মো. সাহাবুদ্দিন, যিনি স্বৈরাচারের দোসর ছিলেন আমরা তার পদত্যাগের দাবি জানাই। অন্যথায় এই ছাত্র-জনতার পক্ষ থেকে আরও কঠোর থেকে কঠোর আন্দোলনের ডাক দেওয়া হবে।
রিফাত রশিদ বলেন, এই মুজিববাদ যেখানে প্রবেশ করেছে সেই জায়গাকে পঁচিয়ে বের হয়েছে। এই মুজিববাদ ৭২-এর সংবিধানকে কলুষিত করেছে। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে গড়ে ওঠা ফ্যাসিস্টদের দালালরা এই দেশে থাকতে পারবে না। শেখ হাসিনার বিচার এই বাংলার জমিনে হবে। এই ছাত্র-জনতার আকাঙ্ক্ষা একটা নতুন সংবিধান, একটি নতুন বাংলাদেশ।
এছাড়া, বিক্ষোভ সমাবেশে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক সানজিদা আফিয়া অদিতি, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সমন্বয়ক রাসেল আহমেদ, হাসিব আল ইসলাম, আব্দুল হান্নান মাসুদ, আব্দুল কাদেরসহ অনেকেই বক্তব্য দেন।