ওয়ার্ক পারমিটে বড় পরিবর্তন আনছে সুইডেন
ওয়ার্কার ভিসায় পরিবর্তন আনছে ইউরোপের দেশ সুইডেন। ওয়ার্ক ভিসা, অর্থাৎ কাজ করার ভিসার জন্য আয়ের শর্ত বাড়াতে চাইছে সুইডেন।
বৃহস্পতিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) সুইডেন সরকার এ তথ্য জানিয়েছে। ২০২৩ সালের নভেম্বরে আয়ের শর্ত দ্বিগুণ করা হয়েছিল।
দেশটিতে ওয়ার্ক পারমিটের ক্ষেত্রে বেতনসীমা দ্বিগুণ হয়েছে। এ বিষয়ে অভিবাসন মন্ত্রী মারিয়া মালমার স্টেনারগার্ড বলেছেন, নর্ডিক দেশে প্রাথমিকভাবে, যোগ্য এবং উচ্চমাত্রার যোগ্য শ্রম অভিবাসনের প্রয়োজন। এখানে এখনো পেশার কারণে ব্যাপক অভিবাসন হয়ে চলেছে, যেখানে দক্ষতার চাহিদা কম, আবার মজুরিও কম।
বিদেশি কর্মীদের জন্য ন্যূনতম বেতনের শর্ত বাড়ানো নিয়ে সরকারি অনুসন্ধান শেষ হওয়ার পর এক সংবাদ সম্মেলনে স্টেনারগার্ড এসব কথা বলেন।
সুইডেনে এতদিন উত্তর ইউরোপের দেশগুলোর তুলনায় সহজেই ওয়ার্ক পারমিট এবং স্থায়ী বসবাসের অনুমতি পাওয়ার সুযোগ ছিল।
তবে ২০২৩ সালের ১ নভেম্বর থেকে, শেনজেন এলাকা বা ইউরোপীয় ইউনিয়নের বাইরের বিদেশিদের সুইডেনে কাজের ভিসা পেতে ২৭ হাজার ৩৬০ ক্রোনার (দুই লাখ ৮৬ হাজার টাকা) মাসিক বেতন থাকতে হবে।
আগে এটা ছিল ১৩ হাজার ক্রোনার। যদিও মৌসুমি কৃষি ভিসায় সুইডেনে এলে, তাদের ক্ষেত্রে নতুন এ নিয়ম কার্যকর হবে না।
এরই মধ্যে যারা ওয়ার্ক পারমিট নিয়ে দীর্ঘ সময় ধরে দেশটিতে বসবাস করছেন তাদের ভিসা নবায়নের ক্ষেত্রেও কার্যকর হবে নতুন এ নিয়ম।
এছাড়া যারা আগের বেতনে ওয়ার্ক পারমিট বা স্থায়ী বসবাসের অনুমতির জন্য আবেদন করেছেন তাদেরও নতুন শর্ত পূরণ করতে হতে পারে।
দেশটিতে মধ্যবিত্তদের মজুরির সঙ্গে মিল রেখে যা কর্ম ভিসার ক্ষেত্রে বেতনের মাপকাঠি ৩৪ হাজার ২০০ ক্রোনারে নিয়ে যাওয়ার প্রস্তাব দিয়েছে সরকারি তদন্ত কমিটি।
অভিবাসনবিরোধী সুইডেনে ডেমোক্র্যাটদের জোট সরকার বর্তমানে ক্ষমতায় রয়েছে। রক্ষণশীল মডারেট পার্টির উলফ ক্রিস্টারসন ২০২২ সালে ক্ষমতায় আসার পর থেকে অভিবাসন সীমিত করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
ন্যূনতম আয়ের শর্ত বেড়ে যাওয়ায় যে দুটি খাত সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে তা হলো রেস্তোরাঁ এবং পরিচ্ছন্নতা বিভাগ।
সংবাদ সম্মেলনে স্টেনেরগার্ড বলেন, অনেক ক্ষেত্রে এমন চাকরি সুইডেনে বসবাসকারী ব্যক্তিরাই করতে পারেন। সুইডিশ মাইগ্রেশন এজেন্সির তালিকার ভিত্তিতে দক্ষতার ঘাটতি রয়েছে এমন ক্ষেত্রে নিয়মে ব্যতিক্রমে অনুমতি দিতে চায় সরকার।
তিনি বলেন, দক্ষ শ্রমিকদের আগমন প্রসারিত করার পাশাপাশি এই তদন্তে প্রস্তাব দেয়া হয়েছে, গবেষকদের এই ক্ষেত্রে নতুন বেতনের স্তর পূরণের দরকার নেই। বিদেশি ডাক্তার, নার্স এবং ডেন্টিস্ট, যারা নিজেদের যোগ্যতার স্বীকৃতি পেতে অপেক্ষা করছেন এবং স্বল্প বেতনের চাকরিতে কাজ করেন, তাদেরও এ ক্ষেত্রে ছাড় দেওয়া হবে।
জানা গেছে, ২০২৩ সালের নভেম্বর পর্যন্ত, মোট ৬৩ হাজার ৪৭৭ জন ব্যক্তির কর্মভিসা রয়েছে। তবে তাদের মধ্যে ১৪ হাজার ৯৯১ জন কিন্তু ২৭ হাজার ৩৬০ ক্রোনারের বর্তমান বেতন ধাপ অতিক্রম করেননি। ২০২৫ সালের ১জুন নতুন শর্ত কার্যকরে বিল পাস করতে পারবে বলে আশা করছে সুইডিশ সরকার।