দুর্নীতি ও অনিয়ম তদন্তে পবিপ্রবিতে ৪৯ সদস্যের কমিশন গঠন
পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (পবিপ্রবি) বিগত কয়েক বছরে সংঘটিত বিভিন্ন আর্থিক, প্রশাসনিক এবং একাডেমিক অনিয়ম ও দুর্নীতি তদন্তের লক্ষ্যে বিশেষ কমিশন গঠন করা হয়েছে।
বুধবার (২৩ অক্টোবর) রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের নির্দেশে গঠিত এই কমিশন পবিপ্রবির শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে ঘটে যাওয়া শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন, যৌন হয়রানি, র্যাগিং, সিট বাণিজ্য, চাঁদাবাজিসহ বিভিন্ন দুর্নীতির অভিযোগ তদন্ত করবে।
বিশ্ববিদ্যালয়টির রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. এস. এম. হেমায়েত জাহান কে চেয়ারম্যান এবং অধ্যাপক ড. মামুন-উর-রশিদ কে সদস্য সচিব করে মোট ৪৯ সদস্যের গঠিত কমিশন এই তদন্ত কার্যক্রম পরিচালনা করবেন। এতে পবিপ্রবির বিভিন্ন বিভাগের অধ্যাপক, প্রভোস্ট, পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক, প্রক্টরসহ অন্যান্য প্রশাসনিক কর্মকর্তারা অন্তর্ভুক্ত রয়েছেন। উক্ত কমিশনকে বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরে সংঘটিত সব ধরনের অনিয়ম ও দুর্নীতির বিষয়ে নিরপেক্ষভাবে তদন্ত করে দ্রুত সময়ের মধ্যে সুপারিশমালা জমা দেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। তদন্তের প্রয়োজনে সাব-কমিশন গঠন করতেও কমিশন ক্ষমতাপ্রাপ্ত।
জুলাই-২০২৪ বিপ্লব পরবর্তী শিক্ষার্থীদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে এই তদন্ত কমিশন গঠন করা হয়েছে। ঐ সময়ে দেশব্যাপী গণআন্দোলনের মাধ্যমে শেখ হাসিনা সরকারের পতন ঘটে এবং এরপর থেকেই বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়।
কমিশনকে যে বিষয়গুলো তদন্ত করতে বলা হয়েছে তার মধ্যে রয়েছে:
১. বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীদের উপর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন, যৌন হয়রানি, র্যাগিং, গেস্ট রুম টর্চার, সিট বাণিজ্য ও চাঁদাবাজি।
২. বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী ছাত্র-ছাত্রী, শিক্ষক এবং কর্মচারীদের শারীরিক, মানসিক ও প্রশাসনিক হয়রানি।
৩. নিয়োগ প্রক্রিয়ায় মেধার অবমূল্যায়নের ফলে কোনো চাকরিপ্রার্থী আত্মহত্যার প্ররোচনা পেয়েছে কি না, সেই বিষয়ে তদন্ত।
৪. অনিয়মের কারণে শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের চাকুরিচ্যুতি এবং শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন।
৫. নিয়োগ, পদোন্নতি ও প্রশাসনিক অনিয়ম এবং স্বজনপ্রীতির অভিযোগ।
৬. ভর্তি ও সেমিস্টার পরীক্ষায় অনিয়ম ও প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঘটনা।
৭. বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়নমূলক কাজ ও টেন্ডারবাজি, চাঁদাবাজি এবং আর্থিক দুর্নীতি।
এছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরীণ কর্মকাণ্ডে অবৈধ অর্থ গ্রহণ এবং সৃজনী বিদ্যানিকেতনে সংঘটিত আর্থিক ও প্রশাসনিক দুর্নীতির বিষয়ে তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এ উদ্যোগ বিশ্ববিদ্যালয়ে স্বচ্ছতা, ন্যায্যতা এবং শৃঙ্খলা পুনঃপ্রতিষ্ঠায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।