ঢাকার মিরপুর-১৪ এলাকায় গড়ে ওঠা ‘বিজয় রাকিন সিটি’ নামক আবাসন প্রকল্পের ৮৭০টি ফ্ল্যাটের অর্ধেকই প্রভাবশালীদের দখলে রয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। মুক্তিযোদ্ধা ও মুক্তিযোদ্ধা পরিবার কল্যাণ সমিতির সদস্যদের জন্য বরাদ্দ এসব ফ্ল্যাটের বেশিরভাগই এখন ক্ষমতাসীন দলের নেতা, সরকারি কর্মকর্তাদের হাতেও চলে গেছে।
রাকিন ডেভেলপমেন্ট লিমিটেডের তত্ত্বাবধানে গড়ে ওঠা এই প্রকল্পে মোট ১,৯৫০টি ফ্ল্যাট নির্মাণ করা হয়। চুক্তি অনুযায়ী, সমিতিকে দেয়া হয় ৪৩ শতাংশ ফ্ল্যাট, যার মধ্যে ৮৭০টি ফ্ল্যাট সদস্যদের জন্য বরাদ্দ ছিল। তবে অভিযোগ রয়েছে, এ ফ্ল্যাটগুলোর বেশিরভাগই প্রভাবশালীদের নামে রয়েছে, যার মধ্যে সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোর্শেদুল আলম ও তার পরিবারের সদস্যদের নামে ৭০টি ফ্ল্যাট রয়েছে।
মোর্শেদুল আলমের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি আওয়ামী লীগের নেতা, মন্ত্রী এবং প্রশাসনের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের সাথে সখ্যতা করে এসব ফ্ল্যাট অবৈধভাবে দখল করেছেন। এছাড়া, সমিতির প্রতিষ্ঠার পর থেকে তিনি সাধারণ সম্পাদকের পদটি দখল করে রেখেছেন এবং ভুয়া মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করে তাদের নামেও ফ্ল্যাট বরাদ্দ দিয়েছেন। তাঁর পরিবারের সদস্যদের নামে প্রায় ৭০টি ফ্ল্যাট দখল করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে মুক্তিযোদ্ধা সদস্যদের দাবি, প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধাদের বাদ দিয়ে এসব ফ্ল্যাটে কেবল প্রভাবশালীরা অধিকারী হয়েছেন। তারা জমি এবং ফ্ল্যাট পুনরায় সুষম বণ্টনের দাবি জানিয়েছেন।
জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান সৈয়দ মো. নূরুল বাসির বলেছেন, যদি প্রমাণ পাওয়া যায় যে কোনো কর্মকর্তা অনিয়ম করেছেন, তবে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
রাকিন ডেভেলপমেন্ট লিমিটেডের সচিব আবুবক্কর সিদ্দিক জানান, তারা সমস্ত চুক্তি অনুযায়ী কাজ করে চলেছে এবং সমিতিকে দেওয়া ফ্ল্যাটগুলোর পরিমাণ অতিরিক্ত নয়।
এছাড়া, সমিতির সদস্যরা বর্তমানে নতুন সাধারণ সম্পাদকের অধীনে কাজ করছেন এবং মোর্শেদুল আলমের কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে আইনগত পদক্ষেপ নিতে চেষ্টা করছেন।